Logo

আন্তর্জাতিক    >>   যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি পোল্যান্ডে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি পোল্যান্ডে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি পোল্যান্ডে

পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১৪ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্টিক উপকূলের কাছে রেডজিকোও শহরে এই ঘাঁটি চালু করা হয়, যা ন্যাটো জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এর উদ্বোধনকালে জানিয়েছেন, এটি ওয়াশিংটনের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা গভীর করার একটি প্রতীক। তবে রাশিয়া দাবি করছে, এটি মূলত রুশ সীমান্তের কাছাকাছি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য একটি কৌশল, যা মস্কোর ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির উদ্বোধন উপলক্ষে পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাশুস্কি বলেন, "এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।" পোল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে, রেডজিকোও শহরের কাছাকাছি এই ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে, যা বাল্টিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মতে, এই ঘাঁটির মাধ্যমে পোল্যান্ডে ন্যাটো সদস্য দেশের সেনা উপস্থিতি আরও জোরালো হবে, বিশেষ করে রাশিয়ার প্রতি প্রতিবাদী শক্তির উত্থান এবং বাকি ইউরোপীয় দেশগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে।

রাশিয়া এই পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করেছেন, "এটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর দ্বারা রুশ সীমান্তের কাছে ঘাঁটি স্থাপনের একটি প্রচেষ্টা, যা মস্কোকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই পরিকল্পিত হয়েছে।" পেসকভ আরও বলেন, "রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।"

মস্কোর এই প্রতিক্রিয়ার পর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে যখন পোল্যান্ডের মতো দেশ রুশ সীমান্তের কাছে এই ধরনের অত্যাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করছে।

২০০০ সালে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যখন এই ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন, তখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এর বিরোধিতা করেন। পুতিন দাবি করেছিলেন যে, এটি রাশিয়ার জন্য একটি "প্রকৃত হুমকি" এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। তারপর থেকেই রাশিয়া বারবার এমন ঘাঁটি স্থাপনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আসছে।

অতীতের এই বিবাদ সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তার সামরিক উপস্থিতি ইউরোপে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে, বিশেষ করে যখন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

৫ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর, ন্যাটো সদস্য দেশগুলো নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারে তিনি কিছু সদস্য দেশকে তাদের প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট ব্যয় না করার জন্য সমালোচনা করেছিলেন, যার ফলে বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এ কারণে পোল্যান্ডে এই সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের ঘটনা, বিশেষ করে রাশিয়ার সীমান্তে, ন্যাটো দেশগুলোর নিরাপত্তা প্রশ্নে একটি বড় বার্তা দিচ্ছে। এটি একটি সঙ্কেত যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে চায় এবং কোনো ধরনের বিদেশি হুমকি থেকে দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এই ঘাঁটির মাধ্যমে পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি আরও দৃঢ় হলো। এতে ন্যাটো জোটের আঞ্চলিক নিরাপত্তা আরো জোরালো হবে, যা বিশেষত রাশিয়ার তৎপরতার প্রতি কড়া জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের ফলে পোল্যান্ড ও বাল্টিক অঞ্চল আরও নিরাপদ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যদিও রাশিয়া এর বিরোধিতা করছে, তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘাঁটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।





P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert